মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ অপরাহ্ন
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২৩ আগস্ট, ২০২৪ ইং জেলার গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বুড়িচং উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম। বাঁধ ভাঙার কারণে জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন সংগঠন, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার সকাল বাসসকে এসব তথ্য জানান বুড়িচং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার। তিনি বলেন, বাঁধ রাতে ভেঙেছে, তাই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুড়িচং উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন- ষোলনল, পীরযাত্রাপুর, বুড়িচং সদর, বাকশিমুল এবং রাজাপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ ইউনিয়নের গ্রামগুলো পানিতে প্লাবিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বুড়বুড়িয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা বাড়িঘর হারিয়ে দিশাহারা অবস্থায় আছে। বুড়বুড়িয়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়া বাসসকে জানান, তাঁর বাড়িঘর সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব বলতে গিয়ে একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বুড়বুড়িয়া গ্রামের সেলিম মিয়াজী, বশির উদ্দিন, আনোয়ার জানান, গতকাল রাত ১২ টায় দিকে নদীর পানিতে হঠাৎ ঘূর্ণন শুরু হয়। তারপরই বাঁধ ভাঙতে শুরু করে। প্রথমে বাঁধটি ১০ ফুটের মতো ভাঙে। তারপর ২০ ফুট করে বড় আকারে ভেঙে যায়। বন্যা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হওয়া নানুয়ার বাজার গ্রামের গৃহবধূ আইরিন আক্তার বলেন, ১২ বছরের সংসারটা সাজানো গোছানো ছিলো। পানি সব নিয়ে গেল। বন্যার আশঙ্কায় গতকাল রাতে কোলের বাচ্চাকে নিয়ে সারা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান বাসসকে বলেন, সকাল ৭টা পর্যন্ত প্রায় ৬০ ফুটের মতো বাঁধ ভেঙে যায়, তবে পানি বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, পানি এখনও বিপৎসীমার উপরে। আজ শুক্রবার সকাল ৭টায় ছিল বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার উপরে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালে গোমতীর পানি বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। কিন্তু গত দুইদিনে পানি বাড়ার হিসাব অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে আজ শুক্রবার সকাল ৭টায় ছিল বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার উপরে। যা বিগত ২৭ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে গোমতী।